শেয়ার ব্যবসা কি?

শেয়ার বাজার এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন  দায়বদ্ধ কোম্পানি (পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি) যারা স্টক একচেঞ্জে নিবন্ধিত তাদের শেয়ার বেচা কেনা করা হয়। একে পুঁজি বাজারও বলা হয়। 
বাংলাদেশের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শেয়ার ব্যবসা অনেক ভাবেই করা যায়। একের অধিক দুই বা ততোধিক ব্যক্তি মিলে যে ব্যবসা করে তাকেই শেয়ার ব্যবসা বলে। এই ধরনের শেয়ার ব্যবসা ছাড়াও  বাংলাদেশ তথা বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেই শেয়ার মার্কেট বা ষ্টক একচেঞ্জ নামে একটি বা দুটি করে প্রতিষ্ঠান আছে যেটিকে শেয়ার মার্কেট বা ষ্টক একচেঞ্জ বলে।
বাংলাদেশে বর্তমানে দুটি ষ্টক একচেঞ্জ আছে, একটি চট্রগাম ষ্টক একচেঞ্জ (সিএসই) আরেকটি ঢাকা ষ্টক একচেঞ্জ (ডিএসই), এই দুটি প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়ে থাকে। বিশ্বের বৃহত্তম বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য , জাপান, ভারত, চীন, কানাডা, জার্মানি,ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া নেদারল্যান্ডস সহ অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ অর্থনীতির স্টক বাজার এখন আছে।


শেয়ার ব্যবসা কি? এবং কিভাবে শেয়ার ব্যবসা করবেন ?

কিভাবে শেয়ার ব্যবসা শুরু করবেন?

শেয়ার ব্যবসা করতে হলে প্রথমেই কোন একটি ব্রোকারে গিয়ে BO Account খুলতে হবে। BO Account খুললে ব্রোকার হাউস থেকে একটা ব্রোকার নম্বর BO Account নাম্বার দিবে। আসলে শেয়ার বেচাকেনার জন্য ব্রোকার নাব্বারটাই দরকার BO Account নাম্বারটা লাগে না।
BO Account নাম্বার লাগে শুধু প্রাইমারি শেয়ারের জন্য। যাই হোক একাউন্ট খোলার পর ব্রোকারে টাকা জমা দিতে হবে। টাকা নগদ ক্যাশ বা চেকে দিতে পারেন। ব্রোকারে দেখবেন সবাই একজন ব্যক্তিকে শেয়ারের দাম জিজ্ঞাসা করছে এবং সে কম্পিউটার দিয়ে দাম বলছে দেখছে। টাকা জমা দেবার পর যদি শেয়ার কিনতে চান তবে ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করুন, যে শেয়ার কিনতে চান তার দাম কত। তারপরে দামে যদি শেয়ার কিনতে চান তাহলে বলবেন অমুক কোম্পানির ৫০০ কিনেন। তখন ব্যক্তি আপনার ব্রোকার নাম্বারটি চাইলে তা দিন। 
আরেকটু সহজভাবে বলি মনে করেন, আপনি Beximco এর লট কিনতে চান তখন বলবেন Beximco এর ৫০০ কেনেন (যেহেতু Beximco এর লট ৫০০ টায়) বা লট কিনতে চাইলে বলেন Beximco ১০০০ কেনেন। কিংবা INDOBANGLA লট কিনতে চাইলে বলবেন ৫০ টা INDOBANGLA কেনেন। মনে রাখবেন ব্রোকারে কিন্তু শেয়ার বেচা কেনার সময় লট হিসেবে বলে না। আপনাকে লট এর গুণিতক আকারে সংখ্যায় বলতে হবে। আবার বিক্রি করার সময়ও এভাবে বিক্রি করবেন। 
শেয়ার কিনলে বা বিক্রি করলে কোন কাগজপত্র দেয়া হবে না। অটোমেটিক শেয়ার আপনার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে এবং একাউন্ট থেকে টাকা মাইনাস হয়ে যাবে। আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে পোর্টফলিও প্রিন্ট করে নিতে পারেন। পোর্টফলিও লাগলে একই ব্যক্তিকে ব্রোকার নাব্বারটি দিয়ে বলুন পোর্টফলিও প্রিন্ট করে দিতে।



শেয়ার  ব্যবসা দুই ভাবে করতে পারেন।
১. প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে এবং
২.সেকেন্ডারি শেয়ারের মাধ্যমে।

প্রাইমারি শেয়ারঃ 
বাজারে কোন কোম্পানি প্রথম প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে প্রবেশ করে। অর্থাৎ নতুন কোন কোম্পানিকে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে।
প্রাইমারি শেয়ার বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে যে কোনো কোম্পানি প্রথমে শেয়ার মার্কেটে প্রবেশ করে থাকে।
সেকেন্ডারি শেয়ারে প্রচুর রিস্ক। আবার প্রচুর লাভের সম্ভাবনাও থাকে। প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের একটা ফেস ভ্যালু থাকে। কোম্পানি যখন তার শেয়ারটি মার্কেটে ছাড়তে চায় তখন সে ফেস ভ্যালুর সাথে প্রিমিয়াম যোগ করে একটি নির্দিষ্ট টাকায় শেয়ারটি অফার করে। এসইসি যদি অনুমোদন দেয় তবে তারা তাদের শেয়ার কেনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে। যাকে আমরা IPO/আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বলে থাকি।
ধরা যাক কোন কোম্পানির ফেস ভ্যালু ২০ টাকা এবং তারা ১০ টাকা প্রিমিয়াম সহ শেয়ারের দাম নির্ধারণ করল ৩০ টাকা। এখন যদি ঐ শেয়ার IPO এর মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তবে প্রতি শেয়ারে দাম পরে ৩০ টাকা। এখন ইচ্ছা করলে এই শেয়ার সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করতে পারবেন। সাধারনত দেখা যায় প্রাইমারি শেয়ারের যে দাম তার তুলনায় সেকেন্ডারি মার্কেটে এর দাম বেশি হয়ে থাকে। শেয়ারটি যদি সেকেন্ডারি মার্কেটে ২৫ টাকায় ওপেন হয় তবে তখন বিক্রি করলে প্রতি শেয়ারে ১০ টাকা লাভ পেয়ে যাবেন। যদি মনে করেন এই কোম্পানি সামনে আরো ভাল করবে তবে প্রাইমারিতে প্রাপ্ত শেয়ার অনেক দিন ধরেও রাখতে পারেন পরবর্তিতে বেশি দামে বিক্রির জন্য।
আবার মনে করুন, যে কোম্পানির প্রাইমারি শেয়ার কিনতে চাচ্ছেন তার প্রিমিয়াম অনেক বেশি। তাহলে সেকেন্ডারি মার্কেটে যে দামে শেয়ার কিনেছেন তার তুলনায় দাম কমেও ওপেন হতে পারে। তাই প্রাইমারি শেয়ার মানেই লাভ না মনে করে কোম্পানিটি কি দামে শেয়ার ছাড়ছে প্লাস কোম্পানির আয় কেমন অর্থাৎ কোম্পানিটি ভাল কিনা তা যাচাই করে কিনুন। 


সেকেন্ডারি শেয়ারঃ 
প্রাইমারি শেয়ার যখন কেউ বিক্রি করে দেয় তখন তা সেকেন্ডারি শেয়ারে পরিনত হয়। সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে হলে শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকতে হবে। অর্থাৎ ব্যবসা করার জন্য ফান্ডামেন্টাল প্লাস টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। এ ধারনা অর্জন করতে পারলে শেয়ার ব্যবসায় ভাল লাভ করতে পারবেন। আর যদি দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারে ব্যবসা করেন এবং একে পেশা বা বাড়তি ইনকামের সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে সেকেন্ডারি মার্কেট খুবই উত্তম যায়গা। সেকেন্ডারি শেয়ার এর দাম যখন তখন উঠা নামা করে, দিনের শুরুতে একটি শেয়ারের দাম দেখলেন ১৩০ টাকা, দিনের শেষে হয়তো ১৩০ থেকে বেড়ে ১৪০ বা ১৫০ টাকাও হতে পারে, আবার তা না হয়ে ১৩০ টাকা থেকে ১১০ বা ১০০ টাকায়ও নেমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনাকে ধৈর্য সহকারে শেয়ার বাজার পযালোচনা করতে হবে। যখন শেয়ারের দাম বাড়বে তখন যদি আপনি শেয়ারটি বিক্রি করেন তাহলে আপনার লাভ হবে। আবার যখন শেয়ারের দাম কমবে তখন যদি আপনি বিক্রি করেন তাহলে আপনার ক্ষতি হবে। এখন বাকিটা আপনার ব্যাপার। আপনি কি করবেন।
ব্রোকার হাউজ কি?

Brokerage শব্দটা মূলত Broker থেকে এসেছে। Broker অর্থ দালাল। আর Brokerage house অর্থ দাড়ায় দালালি প্রতিষ্ঠান। সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের তালিকাভুক্ত যে কোন পাবলিক কিংবা প্রাইভেট কোম্পানির শেয়ার,ঋণপত্র বা সিকিউরিটিজ,বন্ড ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যম হিসেবে ব্রোকারেজ হাউজ কাজ করে থাকে।

এমন কি কোন কোম্পানি শেয়ার বাজারে অন্তর্ভূক্তির জন্য IPO বিক্রি করতে হয় এই ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে। এখানে একটা কথা বলা দরকার,যে কোম্পানি শেয়ার বিক্রি করবে সে কোম্পানি নিজে বিক্রির কাজটা করতে পারেন না, কাজটা কোম্পানির হয়ে ব্রোকারেজ হাউজ করে থাকে। 
ব্রোকার হাউজ হলো শেয়ারের ক্রেতা বিক্রেতার একটি মাধ্যম। যাদের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা হয়ে থাকে। ব্রোকার হাউজ তাদের একটি নিদিষ্ট কমিশনের মাধ্যমে এই কাজটি করে থাকে। মনে করুন আপনি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনবেন তখন আপনাকে ব্রোকার হাউজে গিয়ে তাদের কাছে বলতে হবে কোন শেয়ারের মূল্য কত বা আপনার পছন্দকৃত শেয়ারের মূল্য কত। তখন তারা তাদের কম্পিউটার থেকে চেক করে আপনাকে জানাবে ওই কোম্পানির শেয়ার মূল্য বর্তমানে এতো টাকা। তখন যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে আপনার পছন্দের শেয়ারটি কিনতে পারবেন। 


একইভাবে আপনি যদি কিছুদিন পর আপনার শেয়ারটি বিক্রয় করতে চান তাহলেও আপনাকে সেই ব্রোকার হাউজে গিয়ে তাদের বলতে হবে আপনার শেয়ারটি বিক্রয় করবেন, তখন ব্রোকার হাউজ আপনার শেয়ারটি অন্যকারোর কাছে বিক্রয় করে আপনার ব্যাংক একাউন্টে টাকা পরিশোধ করে দিবে। মূলত এটাই হলো ব্রোকার হাউজের প্রধান কাজ। বাংলাদেশে অনেক ব্রোকার হাউজ রয়েছে যারা শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে কমিশনের মাধ্যমে।


কেন কোম্পানি শেয়ার বিক্রয় করে?
একটি কোম্পানি কেন তাদের মালিকানা সাধারণ জনগণের সাথে ভাগ করবে? এর মূল কারণ হলো, কোম্পানির টাকার প্রয়োজন। প্রাথমিক বিনিয়োগের টাকা তোলার জন্যই হোক কিংবা ব্যবসা বড় করার জন্যই হোক; একটি কোম্পানির টাকার প্রয়োজন পড়বে। অর্থের পরিমাণ তারা বাড়াতে পারে দুভাবে। হয় তাদেরকে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ধার নিতে হবে, নয়ত তাদের মালিকানার কিছু অংশ বিক্রি করতে হবে। 

তাহলে কোনটি কোম্পানির জন্য বেশি সুবিধাজনক? মনে করুন, আপনি বাংলা খাবারের একটি রেস্টুরেন্ট করতে চাচ্ছেন। ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রাথমিক খরচের একটি খসড়াও তৈরি করেছেন। জায়গা কেনা, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, কর্মী নিয়োগ দেওয়া ইত্যাদি মিলিয়ে আপনার সর্বমোট ৩ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু মূল সমস্যা হলো, এত টাকা আপনার কাছে নেই। 

আপনি হয়ত কোনো ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে আবার আপনাকে উচ্চ হারে সুদ দিতে হতে পারে। তাহলে এটা করলে কেমন হয়, আপনি কয়েকজন বিনিয়োগকারীর সাথে দেখা করলেন এবং টাকার বিনিময়ে আপনার রেস্টুরেন্টের মালিকানার অংশ দেওয়ার প্রস্তাব করলেন

ঠিক এই ব্যাপারটাই একটি কোম্পানি চিন্তা করে যখন তারা মালিকানার অংশ বিক্রয় করতে চায়। যখন তাদের অর্থের প্রয়োজন হয়, তারা অনেক সময় মালিকানার অংশ বিক্রয় করতে চায়। অর্থাৎ শেয়ার বিক্রয় করতে চায়। কারণ ব্যাংক থেকে ধার নিলে সুদ দিতে হবে। কিন্তু শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করলে তাদের ব্যাংকের চড়া সুদ নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করার টেনশন থাকছে না। বছরের ক্লোজিং শেষে যদি কোম্পানির লাভ হয় তাহলে তা থেকে শেয়ার হোল্ডারদের ভাগ করে দেওয়া হয়। আর যদি ক্ষতি হয় তাহলে কোনো লাভ দেওয়া হয় না।


স্টক এক্সচেঞ্জ কী?

আপনি যদি এরকম একটি রেস্টুরেন্ট চালু করতে যান, তাহলে ব্যাংকের কাছ থেকে ধার না করে বিনিয়োগকারী খোঁজাটা আপনার জন্য বেশি ভালো হবে। কিন্তু আপনি হঠাৎ করে বিনিয়োগকারী পাবেন কোথা থেকে?

আপনি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিতে পারেন কিংবা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আপাতত হয় আপনার কোনো এক বন্ধু শেয়ার কিনে নিলেন। কিন্তু বন্ধুটিই যখন বছর খানেক পরে তার অংশ বিক্রয় করে দিতে চাইবেন, তখন কী হবে? বিশেষ করে যদি আপনার রেস্টুরেন্টের অবস্থা খুব ভালো না হয় তাহলে ক্রেতা পাওয়া নিঃসন্দেহে বেশ কষ্টদায়ক হবে। স্টক এক্সচেঞ্জ মূলত এই সমস্যাটাই দূর করে।

কোম্পানিগুলোর স্টক বা শেয়ার কেনাবেচা হয় স্টক এক্সচেঞ্জে এটি মূলত একটি প্লাটফর্ম। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ হল এরকমই একটি মার্কেট। অনেকগুলো পণ্য একসাথে পাবার জন্য আমরা যেমন সুপারমার্কেটে যাই, তেমনি একটি স্টক এক্সচেঞ্জ হল স্টকের বা শেয়ারের সুপারমার্কেট, যেখানে ক্রেতা বিক্রেতারা শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন। বাংলাদেশে বর্তমানে দুটি স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে। একটি হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এবং অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (CSE)

শেয়ারহোল্ডার বা মালিক

যারা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন বা কিনে থাকনে তাদেরকে বলা হয় শেয়ারহোল্ডার। সোজা কথায়, শেয়ারহোল্ডাররাই হলেন কোম্পানির মালিক। শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানি পরিচালনার জন্য একটি বোর্ড অব ডিরেক্টরস গঠন করেন। এই বোর্ডের সদস্যরা হলেন কোম্পানির নীতিনির্ধারক। 

একটি কর্পোরেশন তাদের শেয়ারহোল্ডার প্রাইভেট ও পাবলিক- এই দু’ভাবেই নিতে পারে। Privately কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা একে অপরকে চেনেন এবং নিজেদের মধ্যেই শেয়ার কেনাবেচা করেন। এসব কোম্পানির শেয়ার কিনে থাকেন হাতে গোনা গুটিকয়েক মানুষ। অন্যদিকে একটি Publicly কোম্পানি তাদের শেয়ার কেনাবেচা করে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে। হাজার হাজার মানুষ এসব কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন, একে অপরের সাথে দেখা না করেও! আমরা সাধারণভাবে শেয়ার কেনাবেচা বলতে যা বুঝি তা আসলে Publicly Held কোম্পানির শেয়ার।


শেয়ারের মূল্য পরিবর্তন

শেয়ার বাজারে আয়ের কোনো নিশ্চয়তা আপনাকে কেউ দিতে পারবে না। এই মার্কেটটাই হচ্ছে ঝুঁকি নিতে চাওয়া মানুষের জন্য!  প্রতি শেয়ার কেনাবেচার সময় ঝুঁকি, লাভ-লোকসান থাকবেই।
এজন্য যখন শেয়ারের লাভ হবে তখন বেশি খুশি হওয়া যাবেনা। একইভাবে যখন লস হবে তখনও হতাশ হওয়া যাবেনা। চলতে হবে সমান্তরালে।

আপনার যদি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট আয়ের একটা উৎস থাকে, তাহলে সেটার তুলনায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই অন্যান্য চাকরি বা ব্যবসার সাথে শেয়ার বাজারকে মিলিয়ে ফেললে চলবে না। বিশেষ করে ঝুঁকি আরও বেশি বেড়ে যায় যখন কেউ পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন। অল্প সময়ে বেশি লাভের আশা কে ছাড়তে পারে বলুন! বলতে গেলে অধিকাংশ সময়ই এমনটাই ঘটে। কিন্তু শেয়ার বাজারে টিকে থাকার অন্যতম দুটি মন্ত্র হল জ্ঞান ধৈর্য। এই দুটো না থাকলে শেয়ার বাজার আপনার জন্য নয়। 

আর এই দুটোর ভালো সমন্বয়ের সাথে যে জিনিসটা চাই সেটা হল ঝুঁকি সামলানোর ক্ষমতা। এই তিনটি ব্যাপারে যখন নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে পারবেন তখনই আপনার উচিত হবে শেয়ার বাজারের দিকে পা-বাড়ানো। শেয়ার বাজারের আরেকটি প্রধান সমস্যা হলো গুজব। আপনি বিনিয়োগ করার পর যদি কারো গুজবে পড়ে আপনার শেয়ার ক্ষতিতে বিক্রি করেন অথবা অনেক উচ্চমূল্যে শেয়ার ক্রয় করেন তাহলে আপনি শেয়ার ব্যবসায় ঠিকে থাকতে পারবেন না। মনোবল সাহসের সাথে শেয়ার ব্যবসায় লেগে থাকতে হবে, তাহলেই আপনি শেয়ার ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।ধন্যবাদ।





 লেখক : মামুন সরকার

1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন