সফল ইউটিউবার হওয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন উপায়

প্রতিদিন হাজারো নতুন ইউটিউবার চেস্টা করছে কিভাবে ইউটিউবে সফল হওয়া যায়। শুরুতে নতুন ইউটিউবারদের উদ্যেম একটু বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে ইউটিউবের প্রতি আস্থা হারিয়ে ইউটিউব থেকে বিদায় নেয়। আবার অনেকে ইন্টারনেটে সার্চ করে কিভাবে সফল ইউটিউবার হওয়া যায় অথবা সফল ইউটিউবার হতে করনীয় কি সফল ইউটিউবার হওয়ার সম্পূর্ন গাইডলাইন কিভাবে পাবো ইত্যাদি ইত্যাদি। তো যারা শেষ পর্যন্ত কাঠখড় পেরিয়ে ইউটিউবে কাজ করে যায় তারাই মূলত একসময় ইউটিউবে সফলতার মুখ দেখতে পায়। আর যারা অঙ্কুরেই হাল ছেড়ে দেয় তাদের কপালে ইউটউবার হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। যাই এই নিয়ে বেশি কথা বলতে চাচ্ছি না। এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে একজন সফর ইউটিউবার হবেন এবং একজন সফল ইউটিউবার হতে করনীয় কি কি। চলুন বেশি কথা না বলে শুরু করে দেই।


ভালো কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করা

কন্টেন্ট হচ্ছে ইউটিউবের একটি প্রান। আপনার ভিডিওর কন্টেন্ট যত ভালো হবে ততই আপনি দ্রুত সফল হবেন। ইউটিউবিং শুরু করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে কন্টেন্ট বা কি বিষয়ের উপর কাজ করবেন তা ঠিক করে নিতে হবে। এবং বিষয় ঠিক করা হয়ে গেলে সেটির উপর ভালো করে অধ্যায়ন করতে হবে যাতে করে ভিডিও আপলোড করার পর কোনো প্রকার ভুলভ্রান্তি না থাকে।


সফল ইউটিউবার হওয়ার সম্পূর্ণ বাংলা গাইডলাইন 2020

নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা।

সফল ইউটিউবার হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ন কাজ হলো নিয়মিত ভিডিও আপলোড করা। টাইম টু টাইম সিডিউল করে যদি ভিডিও আপলোড করেন এতে করে আপনার চ্যানেলের সাবসক্রাইবাররা আপনার নির্ধারিত সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকবে। এতে আপনার চ্যানেলের নির্দিষ্ট সাবসক্রাইবাররা আপনার আপলোডকৃত ভিডিওগুলোকে সর্ম্পূর্ন দেখবে এতে করে আপনার চ্যানেলটি খুব দ্রুত ইউটিউবে র‌্যাঙ্ক করবে।  আপনার চ্যানেলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে। মনে রাখবেন আপনি যে কাজে দক্ষ, যে কাজ আপনি ভালো জানেন, সেই বিষয়ের উপর যদি ভিডিও বানান তাহলে আপনি ইউটিউবে সফল হতে পারবেন। অন্যর চ্যানেলের ভিডিও কপি করে আপলোড করতে পারবেন না। যদিও করেন তাহলে ভিডিওর মালিক এবং ইউটিউব থেকে কপিরাইট ক্লেইম ও স্ট্রাইক খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ 90 দিনের মধ্যে যদি আপনার চ্যানেলে 3 টি কপিরাইট স্ট্রাইক পড়ে তাহলে আপনার চ্যানেলটি ইউটিউব ব্যান করে দিবে। এতে করে আপনার সকল আপলোডকৃত ভিডিও, সাবসক্রাইবার, লাইক, কমেন্ট ইত্যাদি সবগুলো আপনি হারিয়ে ফেলবেন। এই জন্য ভিডিও কপি না করে নিজে ভিডিও বানিয়ে আপলোড দেওয়ার চেস্টা করুন আশা করি আপনি সফল হবেন।


ভিডিওকে এসইও করা

এসইও করার মানে হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করানো। যাতে করে কেউ যদি ইউটিউব অথবা গুগলে তাদের কাঙ্খিত কিওয়ার্ডটি লিখে সার্চ করে এবং আপনি যদি সেই কিওয়ার্ড অনুযায়ী ভিডিওকে এসইও করে থাকেন তাহলে সার্চকৃত ব্যাক্তি অনায়াসেই আপনার ভিডিওটিকে দেখতে পারবে। যেহেতু অডিয়েন্স ভিডিওটিকে খুজে বের করবে নিশ্চয়ই তার কিছু জানার জন্য ভিডিওটিকে সার্চ করবে। এতে আপনার চ্যানেল দ্রুত র‌্যাঙ্ক করবে। ভিডিওর টাইটেল, ডেসক্রিশন ও ট্যাগ এই তিনটি বিষয় অবশ্যই সুন্দর করে এসইও করতে হবে। মূল টাইটেলের কিওয়ার্ডটি ডেসক্রিপশন ও ট্যাগের মধ্যে বসাতে হবে। তাহলেই আপনার ভিডিওর ভিউস বাড়বে। ভিউস বাড়লে আপনিও ইউটিউবে সফলতার দিকে এগিয়ে যাবেন।





আকর্ষনীয় থাম্বনেইল তৈরী করা।

ইউটিউব চ্যানেলকে দ্রুত জনপ্রিয় এবং চ্যানেলের ভিউস বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজটি হচ্ছে সুন্দর ও আকর্ষনীয় থাম্বনেইল তৈরী করা। আকর্ষনীয় থাম্বনেইল দেখে অবশ্যই আপনার ভিডিওতে ক্লিক করবে। কিভাবে সুন্দর ও আকর্ষনীয় থাম্বনেইল বানাবেন এই ভিডিওটি দেখে আসতে পারেন।



ইউটিউব কপিরাইট ল সম্পর্কে জানা।

ইউটিউবে সফল হতে অবশ্যই আপনাকে ইউটিউব কপিরাইট ল সর্ম্পকে ভালো ভাবে জেনে তারপর ইউটিউবে কাজ করতে হবে। নতুন হিসেবে ইউটিউবে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে ইউটিউবের ৩টি গুরুত্বপূর্ন নিয়ম মেনে চলতে হবে। এগুলো হলো কপিরাইট ক্লেইম, কপিরাইট স্ট্রাইক, কমিউনিটি গাইডলাইন, তিনটির মধ্যে দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ন কপিরাইট স্ট্রাইক ও কমিউনিটি গাইডলাইন। কপিরাইট ল সর্ম্পকে না জেনে যদি দুটি শর্ত ভঙ্গ করেন তাহলে আপনার ইউটিউবের স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনাস হয়ে যাবে।


কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ভিডিও বানানো।

এটি সফল ইউটিউবার হওয়ার জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন বিষয়। আপনি সারা বছর কিংবা সারা জীবনও যদি ভিডিও আপলোড করতে থাকেন তাহলেও আপনি সফল হতে পারবেন না। আপনাকে প্রথমেই বুঝতে হবে মানুষ ইউটিউবে কোন বিষয় গুলো দেখতে চায়। মানুষের প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে সমসাময়িক বিষয়ে ভিডিও বানালে অবশ্যই ইউটিউবে সফল হতে পারবেন। কিভাবে বুঝবেন মানুষজন কোন ভিডিও দেখতে চায়? এর জন্য আপনাকে কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলের সাহায্যে নিতে হবে। তারপর সার্চ ভলিউম বেশি, কম্পিটিশন লো দেখে একটি কিওয়ার্ড বাছাই করে সেটির উপর ভিডিও তৈরী করে আপলোড করুন। ব্যস, এভাবে নিয়মিত করতে থাকুন, খুব দ্রুতই আপনি সফল হয়ে হয়ে যাবেন।


সাবসক্রাইবারদের কমেন্টের উত্তর দেওয়া

পূর্বে আপলোডকৃত ভিডিও গুলোর যতগুলো কমেন্ট এসেছে সব গুলোর উত্তর দেওয়ার চেস্টা করুন। 
কোনো অনুরোধ থাকলে সেই অনুযায়ী ভিডিও আপলোড করুন। তাহলে সাবসক্রাইবার আপনার উপর আরো আস্থা বৃদ্ধি করবে।



নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে ভিডিও তৈরী করুন।

হাজারো মানুষের হাজারো চিন্তা চেতনা। প্রশ্ন ভেদে উত্তরও ভিন্ন রকম হতে পারে। অর্থাৎ মানুষ যে বিষয় গুলোর সমাধান গুগল ইউটিউব বা ফেসবুকে খুজে থাকে সেখান থেকে তাদের কাঙ্খিত সমাধানটি নাও পেতে পারে। অথবা নিত্য নতুন কোনো বিষয়ে তাদের অজানাও থাকতে পারে। তাদের এসব বিষয়গুলো অনুধাবন করে ভিডিও বানানোর জন্য আপনাকে যেটি করলে ভালো হবে সেটি হলো বাংলাদেশী বিভিন্ন প্রশ্ন উত্তর সাইটগুলোতে ভিজিট করা। একবার ভিজিট করেই দেখুন ইউটিউবের কন্টেন্ট কারে বলে বা কত আইডিয়া আপনার দরকার? বাংলা জনপ্রিয় ২০ টি প্রশ্ন উত্তর সাইট সর্ম্পকে জানতে ও ভিজিট করতে এখানে ক্লিক করুন।



মানসম্মত ভিডিও এডিটিং ও সাউন্ড

ভিডিওকে সুন্দর ও আকর্ষনীয় করতে হলে ভালো মানের ভিডিও এডিটিং করা শিখতে হবে। ভিডিও কোয়ালিটি অবশ্যই ফুল এইচডি হতে হবে। সাউন্ডে কোনো নয়েজ থাকা যাবেনা। আমি কিংবা আপনি যখন কারো ভিডিও দেখি তখন আমরা কিসের উপর ভিত্তি করে ভিডিও দেখি? অবশ্যই ভিডিও কোয়ালিটি ও সাউন্ড? ভালো মানের ভিডিও এডিটিং করার জন্য বয়া মাইক্রোফোন ও মোবাইল দিয়ে হলে কাইনমাস্টার আর কম্পিউটার দিয়ে হলে ফিলমোরা বা ক্যামটাসিয়া ব্যবহার করতে পারেন।


উল্লেখিত বিষয়গুলোই শুধু সফল ইউটিউবার হওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে ইউটিউবে লেগে থাকতে হবে। নিয়মিত কাজ করে যেতে হবে। দ্রুত ইনকামের চিন্তা বাদ দিতে পারলেই কেবল সফল ইউটিউবার হওয়ার জন্য আপনি নিজেকে গড়ে তুলতে পারবেন। ধন্যবাদ।



লেখক : মামুন সরকার

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন