ডোমেইন এবং হোস্টিং কি?

প্রথমেই জানি ডোমেইন কি? ডোমেইন হলো একটি ঠিকানা বা এড্রেস যেটাকে ইন্টারনেটের ভাষায় বলা হয় ডোমেইন। ডোমেইন বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন .COM/.NET.ORG ইত্যাদি। এগুলো প্রত্যেকটি একটি ডোমেইন প্রোভাইডার কোম্পানি। এই কোম্পানি থেকে টাকা দিয়ে ডোমেইন কিনে ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হয়। ডোমেইন কিভাবে কাজ করে? উদাহরণ দিয়ে যদি বলি www.infoplusbd.com এই যে মাঝখানে ইনফোপ্লাসবিডি এটি একটি ডোমেইন। এই ডোমেইনটি যে কোনো ব্রাউজারে লিখে সার্চ করলে উক্ত সাইটের মধ্যে যদি কোনো প্রকার তথ্য বা পোস্ট করা থাকে তাহলে সার্চ কারীর সামনে সকল তথ্য চলে আসবে। এটাই হলো মূলত ডোমেইন।


এবার আসি হোস্টিং সর্ম্পকে। হোস্টিং হলো আপনার সাইটের মধ্যে যে সকল ডকুমেন্ট, পিকচার, ভিডিও সেভ করে রাখবেন সেটি রাখার জায়গা। আপনি খেয়াল করে দেখবেন যখন কোনো একটি ডোমেইন কিনে সেটাপ দেওয়া হয় এবং সেটিকে সার্চ করা হয় দেখবেন যে আপনার কাঙ্খিত ফলাফল শূন্য আসবে। কারন উক্ত ওয়েবসাইটে কোনো প্রকার পোস্ট বা ছবি অথবা ভিডিও পাবলিশ করা হয়নি এখন পর্যন্ত। যখন উক্ত সাইটে কোনো পোস্ট বা ছবি আপলোড করা হবে তখন যদি আপনি সার্চ করেন আপনার সামনে উক্ত পোস্ট গুলো চলে আসবে। তো এইযে পোস্ট বা ছবি আপলোড দিবেন সেটা আপলোড দেওয়ার জন্য আপনার স্পেস লাগবে। আর এই স্পেসটাই হলো ওয়েবসাইটের ভাষায় হোস্টিং। যদি কিছু কিছু কোম্পানি ফ্রিতে হোস্টিং প্রোভাইড করে থাকে সেজন্য আমরা বুঝতে পারিনা হোস্টিং কি বা কিভাবে কাজ করে। এবার চলুন বিস্তারিত জেনে নিই ডোমেইন এবং হোস্টিং সর্ম্পকে।



ডোমেইন এবং হোস্টিং কি ? ডোমেইন হোস্টিং এর কাজ কি?




১) ডোমেইন কি? ডোমেইন যেভাবে কাজ করে।

ওয়েবসাইট বানাতে হলে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নাম দিতে হবে। আর ওয়েবসাইটের সেই নামকেই বলা হয় ডোমেইন। যে নামের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট লোকজন খুজে পাবে সেটাই হলো ডোমেইন। 

যেমন আমরা ফেইসবুক কে খুজে পাই www.facebook.com দিয়ে। গুগল কে অমারা খুজে পাই www.google.com দিয়ে। যে নাম দিয়ে আপনার ওয়েবসাইট একজন লোক ভিজিট করবে সেটাই হলো আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন । ডোমেইন শুধু .com দিয়েই হবে এরকম নয়, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিভিন্ন প্লাটফর্মের ডোমেইন লোকজন ব্যবহার করে থাকে। ব্যবসা বা সাধারন ব্যবহারের জন্য সবাই .com ই ব্যবহার করে। তবে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য লোকজন বিভিন্ন ডোমেইন এক্সটেনশন ব্যবহার করে যেমন: অরগানাইজেশনের জন্য .org, নেটওয়ার্কিং সাইটের জন্য .net ইনফরমেশন সাইটের জন্য .info ইত্যাদিসহ আরও অনেক ধরনের ডোমেইন ব্যবহার করা হয়।


উপরে যে ডোমেইনের কথা বলা হলো সেগুলো হলো প্রিমিয়াম ডোমেইন। এগুলো আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে হলে আপনাকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। সাধারনত এধরনের ডোমেইনের মূল্য ১০০০-২০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে । এক বছরের জন্য। 
ডোমেইন (Domain) একটি ইংরেজি শব্দ এর বাংলা অর্থ হলো স্থান বা ঠিকানা যা ইন্টারনেট জগতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মূলত, ডোমেইন নাম বলতে সাধারনভাবে কোন একটা ওয়েবসাইটের নামকে বোঝায়।প্রত্যেক ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট আইপি অ্যাড্রেস (IP Address) থাকে। যেমনঃ 66.220.159.255. সাধারণত আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট মনে রাখা কষ্টসাধ্য। তাই মনে রাখার সুবিধার জন্য আইপি অ্যাড্রেসের পরিবর্তে ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়। 
এছাড়া এক বা একাধিক কম্পিউটার কে ইন্টারনেট এ চেনার জন্যও ডোমেইন নাম ব্যবহার করা হয়। যেভাবে ডোমেইন কাজ করে থাকে সাধারনত আপনি যখন কোন ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবারে যে কোন ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস লিখে থাকেন, তখন নিম্নলিখিত ধাপগুলোর মাধ্যমে ডোমেইন কাজ করে থাকেঃ- উদাহরণস্বরূপঃ- আপনি যখন www.infoplusbd.com ওয়েবসাইটটি তে প্রবেশ করবেন, তখন নিচের কাজ গুলো সম্পাদিত হবে। প্রথমত, ব্রাউজার আইপি অ্যাড্রেস (IP Address) অনুসন্ধান করে । তারপর SG নেমসার্ভারে রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়, পরবর্তীতে, SG রিকোয়েস্টটি গ্রহণ করে লোকাল সার্ভার হতে প্রাইমারি সার্ভার এর সাথে যোগাযোগ করে, প্রাইমারি নেমসার্ভার infoplusbd.com এর আইপি অ্যাড্রেস লোকাল নেম সার্ভারে পাঠানো হয় ফাইনালি, সেই  www.infoplusbd.com সাইটটি ব্রাউজারে প্রদর্শিত হয় ।


ফ্রি/ পেইড ডোমেইন কোম্পানি

  • InMotion Hosting
  • Domains.Google
  • Namecheap.com
  • infinity
  • Domain.com
  • Bluehost.com
  • HostGator.com
  • GoDaddy.com
  • DreamHost
  • Shopify
  • BuyDomains
  • Name.com
  • 1&1
  • Register.com


২) হোস্টিং কি ? যেভাবে হোস্টিং কাজ করে থাকে।

অনেকেই ডোমেইন কি তা জানেন কিন্তু হোস্টিং কি তা জানেন না। আপনি একটি ডোমেইন কিনলেন তাহলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের একটি নাম কিনলেন। আপনার ওয়েবসাইট কে এমন একটা সার্ভারে রাখতে হবে যেটা ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন অন থাকবে। সবসময় চালু থাকে এমন একটা সার্ভারে আপনার ওয়েবসাইট রাখার সুবিধা দিয়ে থাকে হোস্টিং কোম্পানীগুলো।

হোস্টিং কোম্পানীগুলো মাসিক বা বাৎসরিক টাকার বিনিময়ে এ সার্ভিস দিয়ে থাকে। বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্ন ধরনের মূল্যে হোস্টিং প্রোভাইড করে থাকে। বাংলাদেশে আপনাকে হোস্টিং নিতে হলে বিভিন্ন কোম্পানীকে বিভিন্ন ধরনের মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তাদের পিসি অথবা সার্ভারে নির্দিস্ট পরিমান জায়গা আপনাকে কিনে ব্যবহার করতে হবে। আর আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য যে জায়গাটা কিনবেন সেইট হলো হোস্টিং।
আপনি ইচ্ছা করলে আপনার ব্যাক্তিগত পিসিতেও সার্ভার বানিয়ে আপনার ওয়েবসাইট রাখতে পারেন। এর জন্য আপনার পিসি কে ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে হবে। যদি ২৪ ঘন্টা বিরতিহীন আপনার কম্পিউটারটিকে চালু রাখতে পারেন তাহলে আপনার ব্যক্তিগত পিসিতেই হোস্টিং সেটাপ করতে পারেন। আমার মনে হয় এটা কখনো সম্ভব হবেনা। কারন পিসিতে ওয়েবসাইট রাখলে আপনার কম্পিউটার বন্ধ করা যাবেনা। বা ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার যাবে না। যদি পিসি বন্ধ বা নেটওয়ার্ক না থাকে তাহলে আপনার ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পারবে না। আপনি যে পিসিতে ওয়েবসাইট হোস্ট করবেন সেটা সবসময় চালু থকতে হবে। ওয়েবসাইট সাইট হোস্ট করা পিসিতে চালু থাকলেই আপনার ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পাবেন ২৪ ঘন্টা আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
অনেক ধরনের হোস্টিং বিক্রির কোম্পানী আছে, তারা বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং বিক্রি করে। যেমন: শেয়ার হোস্টিং, ভিপিএস, ডেডিকেটেড সার্ভার ইত্যাদি। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনাকে হোস্টিং স্পেস কিনতে হবে। ডোমেইন এর মতো হোস্টিং এর মূ্ল্যও প্রায় কাছাকাছি।
অনেকেই মনে করেন ডোমেইন হোস্টিং একই জিনিস । অথবা একটা কিনলে ২ টাই একসাথে পাওয়া যায়। এই ধারনাটি সম্পূর্ন ভূল। মুলত ডোমেইন এক জিনিস, হোস্টিং আরেক জিনিস। উভয়টিই আপনাকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। তবে সাধারনত যারা হোস্টিং বিক্রি করে তারা ডোমেইন ও বিক্রি করে থাকে।
আপনি চাইলে যে কোনো একটি ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানি থেকে এক সাথে উভয়টিই কিনে নিতে পারেন। আবার চাইলে আলাদা কোম্পানীর কাছ থেকেও কিনতে পারেন। তবে আমি বলবো আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং একই কোম্পানীর কাছ থেকে কিনেন তাতে আপনার মেইনটেনেন্স করতে সুবিধা হবে। কোম্পানির রিভিউ দেখে ভালো মানের কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন ও হোস্টিং কেনার জন্য আমি পরামর্শ দিব। নিচে কয়েকটি আন্তজার্তিক ভালো মানের ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানির নাম দেওয়া হলো। ওয়েব হোস্টিং হচ্ছে এমন একটি সেবা যার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট টি সব সময় অন বা চালু থাকবে । সেই সাথে ওয়েবসাইট টি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড প্রদর্শন করতে পারবেন। মূলত, আপনার ওয়েবসাইটের Content, Images, Videos, এবং বিভিন্ন File সার্বক্ষণিক তথা দিনে ২৪ ঘন্টা এবং বছরে ৩৬৫ দিন চালু রাখার জন্য একটি স্পেস বা জায়গা প্রয়োজন। আর সেই নির্ধারিত স্পেস বা জায়গা কেই বলা হয় ওয়েবসাইটের হোস্টিং বা ওয়েব হোস্টিং (Web Hosting) । আবার হোস্টিং কে সাধারনত সার্ভার (Server) বলা হয় এবং কখনও এটিকে ওয়েব সার্ভার ( Web Server) ও বলা হয়ে থাকে।


যখন কেউ আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইনটি ব্রাউজারে লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করবে তখন ডোমেইন নামটি IP Address এ রূপান্তরিত হয়ে ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির কম্পিউটারে নিয়ে যাবে মূলত যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের Content, Images, Videos, এবং বিভিন্ন ফাইলগুলো জমা করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে জমা রাখা ফাইলগুলো তৎক্ষণিক ভাবে ভিজিটর বা ইউজারের ব্রাউজারে পাঠানো হয়। তারপর ইউজার সেই ওয়েবসাইট টি দেখতে পান। এভাবেই মুলত ওয়েব হোস্টিং কাজ করে থাকে।



ফ্রি/পেইড হোস্টিং কোম্পানি

  • Hostinger
  • Weebly
  • Wix
  • 000Webhost
  • 5GBfree
  • Awardspace
  • Byethost
  • Dreamnix
  • Freehostia
  • FreeHosting
  • Freehostingnoads.net
  • Freevirtualservers
  • Freewebhostingarea
  • Instafree

আরো পড়ুন> অনলাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় কিছু মাধ্যম।

লেখক: মামুন সরকার

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন