ইউটিউব কপিরাইট কি?
যখন কোনও ব্যক্তি নিজস্ব চেস্টার মাধ্যমে কিছু তৈরি করেন, তখন তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজের কপিরাইটের মালিক হন। কপিরাইটের মালিক হিসাবে, তাদের কাজটি ব্যবহারের একচেটিয়া অধিকার রয়েছে। বেশিরভাগ সময়, কেবল কপিরাইটের মালিকই বলতে পারেন যে অন্য কারও কাছে কাজটি ব্যবহারের অনুমতি আছে কিনা। কপিরাইটার তার ইচ্ছামতো যে কাউকে তার কাজটি ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারেন।
ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম কি?
ইউটিউবের আপলোডকৃত ভিডিওগুলো যদি একই ভিডিও পুরনায় অন্য কেউ তাদের কাজে ব্যবহার করে থাকে এবং উক্ত ভিডিওর মালিক যদি এতে আপত্তি জানায় এটাই হলো ইউটিউব কপিরাইট ক্লেইম। যা ইউটিউবের নিয়ম অনুযায়ী ক্লেইম করে থাকে।
মুল কপিরাইটারের ভিডিও কপি করে ব্যবহারকারী অনেকেই মনে করেন যে উক্ত ভিডিও বা লেখার ক্রেডিট মূল মালিককে দিলে, অথবা অলাভজনক বললে, তারা কপিরাইট ক্লেইম বা স্ট্রাইক দিবেনা, এই ধারনাটি একেবারেই সঠিক নয়।
ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক কি?
কপিরাইট ক্লেইমের মতো ইউটিউবের আপলোডকৃত ভিডিওগুলো একই ভিডিও যদি পুরনায় অন্য কেউ তাদের কাজে ব্যবহার করে থাকে এবং উক্ত ভিডিওর মালিক যদি এতে আপত্তি জানায় তাই হলো ইউটিউব কপিরাইট স্ট্রাইক। যা ইউটিউবের নিয়ম অনুযায়ী স্ট্রাইক বলে বিবেচিত হবে।
কপিরাইট স্ট্রাইক কপিরাইট ক্লেইমের মতো নয়।
কপিরাইট ক্লেইম করলে আপনার চ্যানেলের কোনো প্রকার ক্ষতি হবেনা। যদি কপিরাইট স্ট্রাইক দেয় তাহলে আপনার চ্যানেলটি ব্যান করে দিবে ইউটিউব থেকে। এক্ষেত্রে ৩ মাস তথা ৯০ দিনের মধ্যে যদি ৩ টি স্ট্রাইক আসে আপনার চ্যানেলে তাহলে আপনার চ্যানেলের সকল কিছু বন্ধ করে দিবে ইউটিউব থেকে।
ইউটিউব কমিউনিটি গাইডলাইন কি?
ইউটিউবের নিয়মের বাইরে আপনি যদি আপনার চ্যানেলে অশ্লীল ভিডিও, বিদ্বেষ জড়ানোর উদ্দেশ্য ভিডিও অথবা কাউকে আক্রমন করে কোনো প্রকার ভিডিও আপলোড করে থাকেন এবং উক্ত ভিডিওতে কোনো ভিউয়ার যদি রিপোর্ট করে তাহলে ইউটিউব থেকে আপনাকে কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক দেওয়া হবে। কপিরাইট স্ট্রাইকের মতোই ৩ মাসের মধ্য যদি ৩ তিনটি কমিউনিটি গাইডলাইন স্ট্রাইক আসে তাহলেও আপনার চ্যানেলের সকল প্রকার কাযক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

ইউটিউবের কপিরাইট সর্ম্পকে কিছু ধারনা ও বাস্তবতা।
-
অধিকাংশ ইউটিউবারের ধারনা কপিরাইটের মালিক কোনো রকম ক্রেডিট দিলেই তার ভিডিওতে কোনো ক্লেইম, অথবা স্ট্রাইক আসবে না। এটা একটা ভুল ধারনা। কপিরাইটের মালিককে credit দিলেই তাদের ভিডিওগুলো আপনাকে কপিরাইটযুক্ত কাজে ব্যবহার করার অধিকার দেয় না। কিন্তু প্রচলিতভাবে কোনো ভিডিওর কপিরাইটারকে ক্রেডিট দিলে তারা সচরাচর কোনো ক্লেইম করেনা অথবা ট্রাইক দেয় না। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কপিরাইটের মালিককে ক্রেডিট দেওয়ার পরও ভিডিওতে ক্লেইম অথবা স্ট্রাইক চলে আসে।
- শুধুমাত্র বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে বা 'অলাভজনক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কথাও যদি উল্লেখ করেন তাতেও আপনি কপিরাইট মুক্ত হতে পারবেন না।
- আপনি যদি কোনো সোর্স ভিডিও, অডিও অথবা ছবি ডাউনলোড করে আপনার চ্যানেলে ব্যবহার করেন এতেও আপনি কপিরাইট ক্লেইম মুক্ত নন।
- মার্কেট থেকে সিডি বা ডিভিডি কিনে সেখান থেকে যদি কোনো উপায়ে আপনি ভিডিও, অডিও বা ছবি ব্যাবহার করেন এতেও আপনি কপিরাইট মুক্ত নন।
- এরকম ধারনা অনেকের থাকে যে, টিভি বা মোবাইল থেকে নিজের মোবাইলে রেকর্ডিং করে যদি সেটি ব্যবহার করে তাতে কোনো কপিরাইট ক্লেইম আসবেনা এটা সম্পূর্ন ভুল ধারনা।
- অনেকের ধারনা যে কোনো ভিডিও সামান্য অংশ যেমন ৫ সেকেন্ড অথবা ১০ সেকেন্ড ব্যবহার করলে কোনো সমস্যা নেই। এটাও একটা ভুল ধারনা। ৫ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপেও কপিরাইট ক্লেইম বা স্ট্রাইক দেওয়ার আইনগত ক্ষমতা রাখে মুল ভিডিওর মালিক।
- ভিডিও আপলোড করার পর যদি কপিরাইট ক্লেইম অথবা স্ট্রাইক আসে সেক্ষেত্রে ভিডিও ডিলেট করে দিলে কপিরাইট ক্লেইম চলে যায়। এটাও একটা ভুল ধারনা। ইউটিউব থেকে যখন এবকার ওয়ার্নিং দেওয়া হবে সেটি ৩ মাস পর্যন্ত যেকোনো চ্যানেলে থেকেই যাবে। যদিও আপলোডকৃত ভিডিও বা অডিও ডিলিটও করে দেন।
উপরের বিষয় গুলো সর্ম্পূন্নই নির্ভর করে মূল মালিকের উপর, তারা ইচ্ছা করলে ক্লেইম করতেও পারে নাও করতে পারে।
কিন্তু যদি ভিডিওটি ইউটিউবে লেভেল লাগানো থাকে তাহলে ইউটিউব থেকে অটোমেটিকভাবে কপিরাইট ক্লেইম চলে আসবে।
তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কপিরাইট ক্লেইম আসলে আপনার চ্যানেলের কোনো প্রকার ক্ষতি হবেনা। শুধুমাত্র যে ভিডিওটি আপনি ব্যবহার করেছেন তার সকল প্রকার ইনকাম মূল ভিডিওর মালিকের একাউন্টে চলে যাবে।
আপনি যদি মনে করেন আপনার কোনো প্রকার ইনকামের প্রয়োজন নেই তাহলে আপনার যত ইচ্ছা তত কপিরাইট ক্লেইমের ভিডিও আপনার চ্যানেলে ব্যবহার করতে পারেন।
আইনগত বৈধভাবে কিভাবে ভিডিও ব্যবহার করা যায়।
- কপিরাইট লঙ্ঘন না করে কিভাবে কারো ভিডিও ব্যবহার করবেন? যেসব উপায়ে আপনি ভিডিও ব্যবহার করতে পারেন। ইউটিউব ক্রিয়েটিভ কমন্স থেকে আপনি আইনগত বৈধভাবে ভিডিও বা অডিও অথবা ছবি বিনা অনুমতিতে ব্যাবহার করতে পারবেন। বিনা অনুমতি বলার কারন হলো ইউটিউব যখন কেউ ভিডিও আপলোড করে তখনই ভিডিওর মালিক সেটির অনুমতি দিয়ে রাখে। আর এসব অনুমোদিত ভিডিও ব্যাবহার করতে আপনাকে ইউটিউব ক্রিয়েটিভ কমন অপশনে গিয়ে যে কোনো ভিডিওর নাম লিখে সার্চ করে সেখান থেকে ক্রিয়েটিভ কমনে সিলেক্ট করে সেই সকল ভিডিও গুলো সম্পূর্ন বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করতে পারবেন। ক্রিয়েটিভ কমনের আন্ডারে আপলোডকৃত ভিডিওগুলো আইনগত বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিভ কমনের আন্ডারের ভিডিওর উপরও কপিরাইটার ক্লেইম বা স্ট্রাইক দিয়ে থাকে এ ক্ষেত্রে আপনি আইনগত ডিসপিট করতে পারেন ভিডিওর মালিকের সাথে। ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সগুলি আপনার মূল বিষয়বস্তুর জন্য হওয়ায় আপনি যদি আপনার ভিডিওতে কোনও কন্টেন্ট আইডি দাবি থাকে তবে ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স দিয়ে চিহ্নিত করতে পারবেন না।ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স দিয়ে আপনার আসল ভিডিওটিকে চিহ্নিত করে আপনি পুরো ভিডিওটি পুনরায় ব্যবহার ও সম্পাদনা করার অধিকার দিচ্ছেন।
- ইউটিউব ক্রিয়েটিভ কমনস ছাড়া অনলাইনে অনেক সাইট রয়েছে যারা সম্পূর্ন ফ্রিতে অনেক ভিডিও ক্লিপ, অডিও, ছবি ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে থাকে। এই ধরনের উপাদানে কপিরাইট ক্লেইম করার কোনো সুযোগ থাকেনা। কারন তারা ইতিমধ্যেই অনুমতি দিয়ে রেখেছে এসব ভিডিও ক্লিপ অথবা ছবি ব্যবহার করার জন্য।
লেখক :
মামুন সরকার