টমাস আলভা এডিসনের নাম আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। বৈদ্যুতিক বাতি, অডিও রেকর্ডিং, আধুনিক ব্যাটারির আবিস্কারক। এই আবিস্কারের পিছনে তাকে কত শ্রম দিতে হয়েছে জানেন? একবার নয় দুই নয় দশহাজার বার ব্যর্থ হয়েও আজকের পৃথিবীকে করেছেন আলোকিত। আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষুদ্র জ্ঞেনে পুরো পৃথিবীর মানুষের কাছে তিনি থাকবেন চির অমর। এডিসনের প্রসঙ্গটা শুধু উদাহরণের জন্য লিখলাম। তখনকার সময়ে যদি এডিসন বার বার চেস্টা না করতেন তাহলে আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের যথার্থতা আমাদের বোধদয় হতো না। হয়তো এখনো কেরোসিনের বাতি, হারিকেনের আলোই থাকতো আমাদের নিত্যসঙ্গী।

আমাদের বর্তমান সমাজের অবস্থাটা একটু লক্ষ করে দেখুন, সেই ব্রিটিশ আমলে কেউ একজন উচ্চশিক্ষিত হয়ে কোনো এক ঘোস্টির মান উচু করেছে, সেই থেকেই সমাজের দায়িত্বটা অঘোষিত ভাবেই তাদের উপর অর্পিত হয়েছে। ধনসম্পদের পাহাড় গড়ার প্রতিযোগিতায় এদের ধারে কাছে যেতে ১৪৪ ধারা ভাঙতে হবে। দিনমজুরের বেচে থাকার বাসস্থানটিও রেহাই পায়না ধনপতির নেশায়। অথচ বর্তমান ও ভবিষৎতে এমন আর একজন উচ্চশিক্ষিত উত্তরসূরির তালিকা শুন্য। শুধু টাকা চাই টাকা, অডেল সম্পদ, বিদেশে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সেদিকে নজর নেই শুধু টাকা চাই, সম্পদ চাই। অথচ এমন অনেক পরিবার আছে যারা টাকার অভাবে শিক্ষা শব্দটি মুখে নেওয়ার সাহস পায়না।


সমাজটাকে বদলাবে কে?


বর্তমান প্রজন্মটাও ধনসম্পদের প্রতিযোগিতায় শিক্ষা থেকে বিদায় নিয়ে নেমেছে টাকা কামানোর ধান্ধায়। মুর্খের টাইটেল গায়ে নিয়ে সালিশ বিচারেও তাদের উপস্থিতি নিশ্চুপ হাস্যকর। এই যে কস্ট করে লিখতেছি সেটি পড়ার যোগ্যতাটুকুও অর্জন করতে পারেনি। কথায় আছে, যে দেশে বাঘ নেই সেই দেশে বিড়ালই বাঘ। তর্কের খাতিরে মেনেই নিলাম মূর্খ হয়েছো ভালো কথা সেই অবস্থানে থাকো আমার কোনো আপত্তি নেই। যখন আমার মুখের খাবার কেরে নিতে চাইবা তখনই আমার তিব্র আপত্তি। বাপদাদার দেখানো পথেই হাটছে প্রতিনিয়ত। শত বছর আগে কেউ একজন উচ্চশিক্ষিত হয়ে অনেক সুনাম কুড়িয়েছে সেটাকে পুজি করেই যত ধান্ধা,  বর্তমান, ভবিষৎ অন্ধকার।

এই যে সমাজে অনিয়ম, দুর্নীতি, অত্যাচার, জুলুম সেই অতীত থেকে চলেই আসছে। এমন একটা সমাজ থেকে নিতান্তই যুদ্ধ করে কেউ একজন নিজেকে বদলাতে পারলেও সমাজটাকে ফেলে রেখেছে আদিম যুগের পাতায়। ৭০ কি ৮০ বয়শোর্ধ লোকটির মুখে ইতিহাস শুনলে নিজেকে একটু নির্ভার লাগে। সেটি নাহয় নাই বললাম। বর্তমানে তাদের দেখলে বুঝা যাবেনা একসময় না খেয়ে এখন অনেক টাকার মালিক হয়েছে ঠিকই, কিন্তু চরিত্রটা বলদাতে পারেনি। সেই তাদের কেউ কেউ এমন ভাব, এমন ক্ষমতা দেখায় যে, তাদের পূর্বসূরিরা ছিলো শত বছরের জমিদার।

পারিবারিক দ্বন্দ কোথায় নেই? সেটা থাকবে স্বাভাবিক। আমার পরিবার আমার মাথাব্যথা তোমার কি এখানে? জি এটাই সত্য মানে আমার পরিবারে কোনো একটা সমস্যা হলেই ধান্ধার দরজা খুলে যায় এদের। লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে তিলকে বানায় তাল। গাছকে বানায় মাছ, কি অদ্ভুদ আমাদের সমাজের কাঠামো। তেলের মাথায় তেল আরো তেল, জলভরা পুকুরে বৃষ্টির পানি সঞ্চার এমনটাই চলছে সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে।

এই যে বৈষম্য সমাজটাকে বদলাবে কে? সকলকেই দেখি নীতির কথা বলতে কাজের বেলায় শূন্য। এটাকে কি বলে ব্যাখা করবো? লোকদেখানো কথার ফুলঝুরি দুইযোগ ধরে শুনেই আসছি। মানে বুঝাতে চাচ্ছি, আমার বয়স ২৭ কি ২৮ মোটামুটি ১০ বারো বছর থেকেই কিছু বুঝতে শুরু করেছি এই সমাজের হাল অবস্থা। দৃঢ়ভাবে অনেক সত্য কথা বলতে গিয়েও শ্রোতা পাইনি। পেয়েছি অবহেলা পেয়েছি তাচ্ছিল্যে, এমন ভাবেই পেয়েছি কিছু না বললে বুঝবেন কিভাবে? কি শুনতে চান, তাহলে শুনুন, মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি হলো বাসস্থান আর সেই বাসস্থানটি যখন হায়েনারা লুঠে নেয় তখন আপনার প্রতিবাদের ভাষা কি হবে? আপনারটি না হয় অজানাই থাক, আমার প্রতিবাদটি ছিলো ঘরছাড়া থাকমু কেমনে? মাবাবা যাবে কই? যামুনা এখান থেকে,, এতটুকুই কাঙ্খিত শ্রোতা পাইনি! কি আর করা হৃদয়ে রক্তক্ষরনের চাপা কস্ট নিয়ে লালিত বৃক্ষের উপর নির্যাতন করে শান্ত হয়ে দেশান্তর। সেই থেকেই জীবন নামের খাতায় অঘোষিত যুদ্ধা হিসেবে এখনো চলছে অবিরাম।

সেই যুগ আর এই যুগ  জীবন ধারা বদলেছে উন্নত হয়েছে সমাজের অবকাঠামো, উন্নত হয়নি তাদের যারা সুখ নামের সোনার হরিণের পিছনে ছুটে চলেছে অবিরাম নিরন্তর। এই শ্রেণীর মানুষেরা এখনো যে খেক শিয়ালের খোরাক!! নিপীড়ন ও নিযাতন তাদের নিত্য সঙ্গিই বলা চলে। প্রসঙ্গ ক্রমে একটা সূত্র  টানি, ইকোলজি বলে একটা শব্দ আছে, বাস্তবিক অর্থে এই ইকোলজির দ্বারা আক্রান্ত আমাদের মতো নিম্ন স্তরের ভোক্তভোগিরাই । অন্যদিকে উচ্চস্তরের ইকোলজির মানুষেরাও আমাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ তাদের থেকে উপরের স্তরে গিয়ে কিছু করার দুসাহস দেখানোর কোনো লজিক দেখিনা। যাইহোক এই প্রসঙ্গে আর আগাতে চাইনা। শুধু অপেক্ষার প্রহর গুনছি বেলা শেষে কেউ একজন ঠিকই জন্মাবে সমাজটাকে বদলানোর হাতিয়ার হিসেবে। যে কিনা শুধু প্রতিবাদই করবেনা, প্রতিশোধও নিবে।

অবশেষে আশার মশাল হাতে নিয়ে আবারো বলতে চাই এভাবেই কি চলবে সমাজের নীতিমালা। সমাজটা বদলাবে কে? পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম.....




লেখক : “মামুন সরকার”

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন